টারজান ইংলিশ 

আমাদের ট্রেডে বা করপোরেট জগতে অনেক লোককে স্মার্ট ভাবা হয় শুধুমাত্র পলিশড্ ইংরেজি বলার দক্ষতা দিয়ে। আমি এমন অনেককে  চিনি, যাঁদের কারিগরি জ্ঞান ও দক্ষতা  অসাধারণ, আন্তর্জাতিক মানের , কিন্তু ট্রেডে তারা ব্রাত্য,  কারণ ইংরেজিতে কথা বলার দক্ষতা নাই।

গার্মেন্টস ট্রেডের প্রথমদিকে একবার কোন এক ইস্যুতে ক্রেতাকে কড়া ভাষায় ই-মেইল দিয়েছিলাম। আমার ভাষাজ্ঞান ও টুইস্টেড ইংরেজি বলার দক্ষতার অভাব নিয়ে আমার সুপারভাইজার সোজা চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ করে বসলেন। চেয়ারম্যান পুরো ব্যাপারটা খতিয়ে দেখলেন। তিনি ছিলেন  ঠোঁটকাটা লোক।  সবার সামনেই বললেন, ‘জাহিদের এই ই-মেইলে কাজ হইছে কিনা সেটা বলেন!  ক্রেতারা আমাদের ইংরেজি জ্ঞান নিয়ে বিচলিত নয়। আমেরিকা-ইংল্যান্ড ছাড়া বেশীরভাগ দেশের ক্রেতারা টারজান ইংলিশ দিয়েই ব্যবসা করে। আই টারজান, ইউ জেইন, উই লাভ। ঘটনাতো ক্লিয়ার। টারজান জেইনরে ভালোবাসে। এতে গ্রামার থাকলেই কি আর না থাকলেই কি!’

অনেককে দেখি, ইংরেজিতে লেজেগোবরে কিন্তু, নিজের কাজের কারিগরি দক্ষতায় অনন্য। বুঝি এঁদের যদি আরেকটু প্রকাশভঙ্গী ভালো থাকতো এঁরা অনেকদূর পর্যন্ত যেতে পারতেন।  চীন জাপানের উদাহরণ টেনে লাভ কী, ওরা এটা নিয়ে মোটেও চিন্তিত নয়। কিন্তু আমাদের মানসিক দীনতা কোনদিন কাটবে বলে মনে হয় না !

এরকম কোন কিছু হলে, সহকর্মীদেরকে চেয়ারম্যান সাহেবের টারজান ইংলিশের গল্পটা শুনিয়ে দিই।

শুধু পলিশড্ ইংরেজি নয়, টেকনিক্যালি নিজেদের ঋদ্ধ করেন। বলছি না, ইংরেজিতে দক্ষতার দরকার নেই। তাই বলে সেটা নিয়ে হীনম্মন্যতায় ভুগবেন না। কর্মক্ষেত্রে যে কোন ইস্যুতে নিজেকে সর্বোচ্চ ক্ষমতা দিয়ে প্রকাশ করুন।

প্রথম প্রকাশঃ ১৪ই জুন , ২০১৪