আমার নিজের কিছু কথাঃ
‘করপোরেট অবজারভেশন’ বইটির লেখাগুলোর বেশিরভাগ ফেসবুকে ২০১৪ থেকে ১৭ সালের ভিতরে প্রকাশিত। বড়ো কিছু প্রবন্ধ, ব্লগে প্রকাশিত। আমার লেখা মলাটবদ্ধ হবে সেই দুরাশা আমার কখনই ছিলনা। পাকেচক্রে পড়ে আমার এক প্রকাশক বন্ধু মাহমুদুজ্জামান আমাকে বোঝাল যে ঠিক এই জনরার লেখা বাজারে নেই।
করপোরেট লাইফের নানাধরনের মোটিভেশন আর কোক-কম্পিউটার বিক্রির বই আছে এন্তার। সেগুলো অনেক জনপ্রিয়ও বটে। আমাদের নবীন প্রজন্মের কাছে মোটিভেশনাল বই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে, সে বড়ো আনন্দের বৈকি।
তবে আমার যা স্বভাব, বইয়ের লেখা গোছানো শুরু করতে না করতেই আলস্য করতে করতে কোভিড চলে আসল। যাই হোক অবশেষে বইটি একুশে বইমেলার শেষাংশে গিয়ে প্রকাশিত হল।
আমার নিজের লেখার বা বইয়ে সংকলিত লেখাগুলোর যে সীমাবদ্ধতা আমার নিজের চোখে ধরা পড়েছে সেটা শেয়ার করি:
১। আমার লেখার পুরোটাই গার্মেন্টস-টেক্সটাইলের প্রোডাকশন, কারখানার হেড অফিস , বায়িং হাউজ-ভিত্তিক করপোরেট অফিস কেন্দ্রিক। মূলত আমি আমার যাপিত জীবনের বাইরের কিছু লিখিনি বা অন্যকোন বিদেশি করপোরেট বইয়ের বা প্রবন্ধের সাহায্য নিইনি। কিন্তু এটাও তো ঠিক টেক্সটাইল-গার্মেন্টস ছাড়াও অধুনা বাংলাদেশের মোবাইল কোম্পানি, ব্যাংক বা এনজিও গুলো এখন বড় বড় করপোরেট প্রতিষ্ঠান। সেখানে কী কী ধরণের জীবন যাপিত হচ্ছে, সেটা আমি জানি না বলেই সেই সেক্টরের পর্যবেক্ষণ আমার লেখায় নেই। আমার ধারণা, আমার বইয়ের এইটি সবচেয়ে বড় সীমাবদ্ধতা। আমাদের সেক্টরের বাইরের কোন পাঠক নিজেকে রিলেট করতে নাও পারেন।
২। সরকারী কর্মচারীদের দুর্নীতির কথা হরহামেশাই আমরা বলি। কিন্তু আমাদের সেক্টরেও ব্যক্তি পর্যায়ের ও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে নানাবিধ দুর্নীতি আছে। আমাদের সেক্টরের ব্যক্তি পর্যায়ের দুর্নীতি নিয়ে সামান্য কথা আছে। আরো কিছু বলা যেতো।
৩। করপোরেট অফিসগুলোতে অনেক নারী কাজ করছেন দীর্ঘদিন ধরে, তাঁদের নানাধরনের হয়রানি( ক্ষেত্র-বিশেষে যৌন হয়রানি) ও অপ্রাপ্তি নিয়ে তেমন কিছু বলা হয়নি।
৪। ভাষা-শৈলী নিয়ে পাঠক মন্তব্য করবেন। তবে, আমার কাছে মনে হয়েছে,যেহেতু লেখাগুলোর বেশিরভাগ ফেসবুক ও ব্লগভিত্তিক ; কিছুটা চটক ও তাৎক্ষণিক দৃষ্টি আকর্ষণ করার একটা অনাবশ্যক চেষ্টা আছে।
বই তো সকল শ্রেণির পাঠকের জন্য। কিন্তু যেহেতু আমার লেখালেখিগুলো ঠিক বই আকারে বের হবে সেইটি মাথায় নিয়ে লেখা হয়নি। আরো কিছু দুর্বলতা চোখে পড়তে পারে।
প্রথম প্রকাশঃ ১২ই নভেম্বর ২০২২
সাম্প্রতিক মন্তব্য