ট্রেডের এক বড়োভাই কোন কারণে বিমর্ষ ছিলেন। তাঁর ঊর্ধ্বতন একজনের চাকরীচ্যুত হয়েছেন হুট করে। সেই বসের সঙ্গে তাঁর কিছু খুনসুটি ছিল। তাঁকে বহুদিন আগে শোনা একটা কর্পোরেট জোক বললাম। মরাল অব দি স্টোরি উহ্য রেখে, সেইটা বোঝার মতো কাবিলিয়াত তার আছে।
তো হয়েছে কী , এক জঙ্গলে অনেক প্রাণীর সাথে বনের রাজা সিংহ আর তার স্ত্রী সিংহী থাকে। দৈর্ঘ্যে প্রস্থে বড়ো হাতী বা আরো কিছু প্রাণী থাকে বটে , তবে সিংহ দম্পতিকেই সবাই বনের অধিপতি ধরে নিয়েছে।
একদিন বনের সবচেয়ে নিরীহ ইঁদুরকে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পোঁটলাপুটলি নিয়ে দৌড়াতে দেখে কয়েকজন জিজ্ঞেস করলো, ‘কীরে কাহিনী কি, হন্তদন্ত হয়ে কই যাস?’
ইঁদুর কোন উত্তর দেয় না, বলে ‘ না রে ভাই, এই বনে আর থাকুম না, নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতাছি।’
বলে আর দৌড়ায়। অবশেষে একজন তারে দাঁড় করালো। ‘ খুলে বল, কী হয়েছে।’
ইঁদুর হাঁপাতে হাঁপাতে বলে, ‘আর কইয়েন না মিঞাভাই, কে যেন সিংহীরে রেপ করছে। সিংহ আবার সন্দেহ করতাছে আমারে!’
আমার নিজস্ব মরাল অব দি স্টোরিটা বলি।
কর্পোরেট জগত আসলে অনেক হিংস্র একটা জায়গা। ‘সারভাইভাল অফ দি ফিটেস্ট’ এখানকার অবধারিত প্রমাণিত সূত্র। হঠাৎ হঠাৎ দেখবেন বড়ো কোন কর্মকর্তার চাকরি নাই। সকালে অফিসেও ঢুকতে পারেন নি। রিসিপশন থেকে কাগজপত্র দিয়ে পত্রপাঠ বিদায়। এখন তার এই আকস্মিক বিদায় নিয়ে ছোট্ট কোন কর্মকর্তা যদি ভাবা শুরু করে, আহারে বেচারা বোধহয় আমার কোন গাফিলতিতে চাকরি হারিয়েছেন, তবে তো মুশকিল !
না রে ভাই, যিনি বিদায় হচ্ছেন বা হলেন, তাঁর এই বিদায় প্রক্রিয়া অনেক আগের থেকে শুরু হয়েছিল। এবং সেটা অনেক উঁচু লেভেলে থেকে শুরু হয়েছিল। আপনি নিজেকে নিমিত্ত ভেবে মনঃকষ্টে থাকবেন না।
প্রথম প্রকাশঃ ১৩ই এপ্রিল, ২০১৩
সাম্প্রতিক মন্তব্য