যথারীতি আমাদের পূর্ববঙ্গের আশির দশকের রিয়েল লাইফ অভিজ্ঞতা। এলাকার সিনিয়রের কাছে শোনা।
তো হয়েছে কী, তাদের গ্রামে একজন মোটামুটি সম্পন্ন গৃহস্থ মারা গেলেন হুট করে ; উঠতি বয়সের সন্তানসন্ততিদের রেখে। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম লোকের অকালমৃত্যু হলে কী হয় সেটা দেখার প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা আমার আছে।

গ্রাম- মফস্বলে প্রথম কিছুদিন প্রতিবেশীদের আহা উঁহু থাকে। ধীরে ধীরে সবাই যার যার জীবন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। মৃতের পরিবারে কীভাবে চলছে, কী খেয়ে বেঁচে আছে সেটা দেখার সময় থাকে না সঙ্গত কারণেই।
চারিদিক আঁধার হয়ে এলে ভিটে-বাড়ি বাদে অন্যসব জমি বিক্রি করে পড়াশোনা আর জীবনধারণের প্রাণান্ত চলে।

যথারীতি ঐ পরিবারের বড়ছেলেটি যে কিনা আমার পরিচিতের প্রতিবেশী সেও বাধ্য হয়ে টুকটাক করে বাপের কষ্টের করা জমি বিক্রি করা শুরু করল। প্রতিবেশী মুরব্বীরা ব্যাপারটা তেমন পছন্দ করছিল না। এভাবে জমি বিক্রি করে খেলে আর কতদিন। এক সময় তো হাত পাততে হবে। আবার করারও কিছু ছিল না।
যাই হোক একদিন নদীর ঘাটে কয়েকজন মুরব্বী তাকে ধরল।

‘বাপু হে ! তুমি যেভাবে জমি বিক্রি করে খাতিছ, এভাবে চললি বুড়া হলি কী খায়া থাকবা ?’
সে উত্তর দিল, ‘ কাকা, এখুন আগে আমার খায়া জানে বাঁচতি হবি। খাতি পারলি না তবে বুড়া হতি পারব ; না খাতি পারে মরেই যদি গেলাম ; তালি পর আর বুড়া হব কেম্মা করে !’

প্রকাশকালঃ ৩০শে মার্চ,২০২০