প্রথমটি বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের অগ্রজ ছড়াকার, শিশুসাহিত্যিক আমীরুল ইসলাম ভাইয়ের কাছে শোনা বছর তিরিশেক আগে।এর অনেকগুলো ভার্সন আছে। পেয়ারার জায়গায় ডিম, মাছ — বন্ধুর জায়গায় দুই ভাই , ইত্যাদি ইত্যাদি। উপাদানের পরিবর্তনে সমীকরণের মৌলিক কোন তফাৎ হয় না !

দুই ঢাকাইয়া হরিহর আত্মার দোস্ত, পল্টু আর বল্টু। দু’জনে সর্বদা সর্বত্র একসঙ্গে ওঠা-বসা-খাওয়াদাওয়া করে।
একদিন পল্টু একটা পেয়ারা নিয়ে এসে

বলল: দোস্ত এই ল সপরিআমটা ভাগ কর, দুইজন মিল্যা খাই।
বল্টু পেয়ারাটা হাতে নিয়ে ভাগ করে নিজে অর্ধেক রেখে, অর্ধেকটা পল্টুকে বাড়িয়ে
দিলো: এই লে দোস্ত , খা ।
পল্টু পেয়ারার টুকরোখানি হাতে নিয়ে অভিমানের সুরে বলল: দোস্ত, তোর কুনু ইনসাফ নাইক্যা …… ।
বল্টু বলল: ক্যালা দোস্ত, এই কথা কইলি ক্যান ?
পল্টু বলল: এই যে তুই আমটা ভাগ করলি, কমটা আমারে দিলি আর বেশিটা তুই নিলি ।
বল্টু বলল: আচ্ছা দোস্ত, তুই অইলে কি করতি ?
পল্টু বলল: ক্যান আমি কমটা লিতাম, তোরেই বেশিটি দিতাম।
বল্টু বলল: তাইতো করলাম, তয় এতো কথা কচ ক্যান্ ? খা বয়া বয়া !

ধোপার গাধার গপ্পো কবে, কখন , কার কাছে শুনেছিলাম মনে নেই। গল্পে কতো কিছুই তো হয়। “শিলা জলে ভাসি যায় বানরে সঙ্গীত গায় দেখিলেও না হয় প্রত্যয়॥” এই গল্পে গাধাও কথা বলে ; বিচার বিবেচনা আছে আর কী !

বহু বহুযুগ আগের কথা। এই বাংলার কোন এক গ্রামে ধোপা আছে, আছে তার গাধা।
ধোপা সারা গ্রামের কাপড় গাধাকে দিয়ে নদীর ঘাটে নেয়, কাচে শুকায়। নিজে ভাল খায়, কিন্তু গাধাটিকে কম খেতে দেয়। এদিক সেদিক করলে পিঠের উপর দুয়েক ঘা পড়ে।
তো, সেই গ্রামে একবার ডাকাত পড়ল। আর সবার মতো যৎসামান্য যা কিছু আছে তা নিয়ে নিয়ে ধোপা গাধার পিঠে করে পালাচ্ছে।
হাফাতে হাফাতে ক্লান্ত , পরিশ্রান্ত গাধা এক পর্যায়ে জিজ্ঞেস করল: মালিক আমরা দৌড়চ্ছি কেন ?
ধোপা: দৌড়াচ্ছি, কারণ ডাকাত পড়েছে, এরা আমাদের সবকিছু কেড়ে নেবে।
গাধা: আমার কি হবে?
ধোপা: তোকেও ওরা ধরে নিয়ে যাবে।
গাধা: তারপর?
ধোপা: তারপর তোকে দিয়ে সব ভারী ভারী কাজ করাবে। কাপড় কাচার জন্য ব্যবহার করবে। কম কম খেতে দেবে। এদিক সেদিক করলে পিঠের উপর দেবে কয়েক ঘা।
হাফাতে হাফাতে গাধা এক পর্যায়ে ব্রেক কষে বসল।
ধোপা: কি হলো রে , থামলি কেন ?
গাধা: আপনি ডাকাতের হাত থেকে বাঁচার জন্য পালাচ্ছেন পালান, আমি পালাব না।
আপনি এখন আমাকে দিয়ে যা যা করাচ্ছেন, ডাকাতের হাতে পড়লে তো সেই একই দুরবস্থা, আমার কাছে দুইই সমান !

প্রকাশকালঃ ২রা ফেব্রুয়ারি,২০২০