কর্মক্ষেত্রের হে তরুণের দল!
আমাদের চল্লিশোর্ধদের কর্মক্ষমতা ও দক্ষতা দেখে আমরা অমানবিক মেশিন হয়ে গেছি বলবেন না অথবা অযথা বিস্মিত হবেন না।
এই বিস্ময় আমাদেরও ছিল ! আমরাও উঁচু গলায় বলেছি -অমুক স্যার তো নিজের পরিবারের কাছে অপ্রয়োজনীয় —, আছে খালি অফিস আর কাজ !

তমুক স্যারের কি আর আড্ডা দেওয়ার কোন বন্ধু আছে ! নাকি বউ-বাচ্চাকে সময় দিতে হয় ! নাকি , রাত জেগে মুভিজ দেখতে হয় ! এই আবালে সকাল সকাল সময়মতো অফিসে আসবে না তো কী , আমি আসব ?

যে কথাটা, হে তরুণ, আপনি ভুলে যাচ্ছেন—আমাদের মূলত সুস্থভাবে বেঁচে থাকার সময় আছে কষ্টেসৃষ্টে বছর পনের ! তারপরের বাকী বছরগুলো আধক্ষয়া শরীর টেনে টেনে পার করা! আসন্ন বার্ধক্যে আমাদের নিজেদের চিকিৎসার ও সন্তানদের ভবিষ্যতের দায়িত্ব রাষ্ট্র নিলে হয়তো দম ফেলবার ফুরসত থাকত ! সে আর হচ্ছে কোথায় !

সামনের মাত্র অল্প কয়েকটি বছরের অনিশ্চয়তা আর পাহাড় সমান কাজের বীভৎস চেহারা— না দিচ্ছে আমাদেরকে জীবনকে উপভোগ করতে ; না দিচ্ছে আপনাদের মতো তারুণ্যের আলস্যে মেতে থাকতে !

আমাদের এই অতরুণসুলভ, মেপে চলা , তাড়াহুড়োর কর্মদক্ষতার পিছনের করুণ কাহিনী উপলব্ধি করতে হলে আপনার বয়স পন্চাশের কাছাকাছি আসতে হবে !

তার আগ পর্যন্ত, আমাদের তাচ্ছিল্য দেখানোর সঙ্গে সঙ্গে সমবেদনা দেখাতে ভুলবেন না, এই কামনা করতেই পারি !

প্রকাশকালঃ ২৪শে ডিসেম্বর,২০১৯