লক্ষ্মী দেবী ভালোমানুষ
অসংখ্য তাঁর ভক্ত,
সরস্বতীর খামখেয়ালে
নাগাল পাওয়া শক্ত ।
পুজো তাঁকে করতে হবে
সপ্তাহে সাতদিনই,
তাই বলে যে তুষ্ট হবেন
তেমন তো নন ইনি ।
সন্ধে , সকাল, রাত-দুপুরেও
সাধতে হবে তোমায়,
কোনোমতেই সইবে না তাঁর
একটি বেলা কামাই ।
কিন্তু যদি চিন্তা করো –
মিটল মনোবাঞ্ছা ?
দেখবে তখন আরো অনেক
দুরে তোমার প্রাণ চায় ।
হঠাৎ যদি একটি কোনো
বর দিয়ে দেন দৈবে ,
ভেব না সেই ভাগ্য তোমার
চিরটা কাল রইবে ।
দিয়ে আবার ফিরিয়ে নিতে
দিব্যি তিনি পারেন ,
ডান হাতে যা আজকে দিলেন
বাঁ হাতে কাল কাড়েন।
এইজন্যে সরস্বতীর
নেই পপুলারিটি,
পদ্মবনে একলা তাঁকে
দুরে রাখাই রীতি ।
লক্ষ্মী আছেন ঘরে-ঘরে
মা-কাকিমার যত্নে,
সরস্বতীর বেস্পতিবার
কারোই তাতে মত নেই।
মায়ের পাশে লক্ষ্মীদেবী
মন্দিরে জীবন্ত,
কোথাও আছে একটিও কি
সরস্বতীর জন্য ?
বেশি কী আর – বাংলা ভাষার
কাণ্ড দ্যাখো লক্ষ্যি ,
ভালো হলেই ছেলে-বুড়ো
সক্কলে হয় ‘লক্ষ্মী’ ।
পাপ্‌পা যখন পড়তে বসে
বেলুন-বাঁশি ফেলে,
তখন তারে কেউ কি বলে
‘সরস্বতী ছেলে’ ?

বর্ষ ২১ সংখ্যা ১৪ । ১ ফাল্গুন ১৩৬০। ১৩ই ফেব্রুয়ারি ১৯৫৪