যাহা অবশিষ্ট ছিল ও যাহার আশংকা করিতেছিলাম তাহাই হইয়াছে ; কনিষ্ঠা টুনটুনি বিদ্যালয়ে তাহার সহপাঠিনীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছনা করিয়াছে। শ্রেণি শিক্ষিকার সঙ্গে সাক্ষাৎ করিবার জন্য টুনির ডাক পড়িয়াছে।

দুরালাপে কথা কহিবার সময় টুনি কনিষ্ঠা টুনটুনির বিদ্যালয়ে যাইবার প্রাক্বালে যথারীতি আমার চতুর্বিংশ পুরুষ তুলিয়া অশ্রাব্য গালি বর্ষণ করিতেছিল ! সেই প্রাচীনতম পদ্ধতিতে আমার সমগ্র গোষ্ঠিকুণ্ডলী ধৌত করিতেছিল, আমাদের বংশ খারাপ, সকলেই গোঁয়ারের মতো চলে ; ভদ্রবংশের কেহ হইলে এরূপ আচরণ কখনই করিত না , ইত্যাদি ইত্যাদি।

কনিষ্ঠার কাছ হইতে তাৎক্ষণিক যাহা উদ্ধৃত ও শ্রুত হইয়াছে ; তাহা হইতেছে এই বিশৃঙ্খলার দায়িত্ব অপরপক্ষের! কারণ অপরপক্ষই প্রাথমিকভাবে শুরু করিয়াছিল , কনিষ্ঠা শুধু তাল মিলাইয়া তাহাকে গুটি কয়েক প্রহার করিয়াছে।

আমার সমগ্র বিদ্যালয় জীবনে বোধকরি সপ্তম শ্রেণীতে পড়িবার সময়, অপাঠ্য পুস্তক( সেবা প্রকাশনী, হুমায়ূন আহমেদ ইত্যাদি) লুকাইয়া পড়িতে গিয়া শ্রেণীকক্ষে কয়েক সতীর্থ সমেত বমাল ধরা পড়িয়াছিলাম। প্রধান শিক্ষকের নিকট হইতে গৃহে লালবর্ণ পত্র গিয়াছিল। উহাই প্রথম ও উহাই শেষ।

কোন বিদ্যালয়ে , কোন শ্রেণীতে পড়িতাম , কাহাদের সহিত খেলিতাম, দলাদলি করিতাম, কাহাকে প্রহার করিতাম, প্রহৃত হইতাম; আমাদের জনক-জননী কদাপি তাহার খোঁজ রাখিতেন। জনক প্রায়শ: ভুলিয়া যাইতেন আমি বিদ্যালয়ে নাকি মহাবিদ্যালয়ে ; বিজ্ঞান না কলাবিভাগে অধ্যয়ন করিতেছি। একবারই তিনি আমার অধ্যয়ন লইয়া মাথা ঘামাইয়াছিলেন, অন্যের সু অথবা কুপরামর্শে আমাকে অর্থনীতি বিভাগ হইতে মূলোৎপাটন করিয়া বস্ত্র প্রকৌশলীতে ভর্তি হইতে বাধ্য করিয়াছিলেন। উহাই প্রথম উহাই শেষ।

স্বল্পসংখ্যক সন্তানাদি লইয়া হইয়াছে আমাদের সমস্যা, কী করিলে কী হইবে তাহা ভাবিতে ভাবিতে অভিভাবক-অভিভাবিকাদের রাত্রির সুখনিদ্রার তিরোধান ঘটিতেছে !