ম্যানেজমেন্ট চালানোর অসংখ্য পদ্ধতি আছে এবং প্রতিনিয়ত নতুন নতুন পন্থা আবিষ্কৃত হচ্ছে। প্রচলিত জনপ্রিয়তম পদ্ধতি হচ্ছে অধীনস্থ সাথে একটু দূরত্ব রেখে হুকুম করে বা ডিরেক্ট করে সবকিছু ম্যানেজ করা । অধুনা ইন্টারনেটের বহুল মোটিভেশনাল স্পিকারদের কল্যাণে কোচিং ম্যানেজমেন্ট জনপ্রিয় হয়ে উঠছে । ম্যানেজার এখানে সফল কোচের মতো হাতেকলমে সবকিছু দেখিয়ে দেন, মোটিভেট করেন, কর্মচারীদের কাছ থেকে তাদের সর্বোচ্চটি আদায় করে নেন। খুব বিরলভাবে আছে ডেলিগেশন ম্যানেজমেন্ট। অসামান্য কিছু ম্যানেজার আছেন যারা দায়িত্ব এমনভাবে পরবর্তীদেরকে ডেলিগেট করেন যে, কিছুদিন পরে উনি নিজেকে সবার কাছে অপ্রয়োজনীয় করে ফেলেন। এতে করে প্রতিষ্ঠানের লাভ হয়, সেকেন্ড জেনারেশন তৈরি হয়ে যায় প্রতিষ্ঠানে । পাঠ্যপুস্তকের বিস্তীর্ণ পড়াশোনায় নানাধরনের পদ্ধতি বাস্তবে কিছুটা-তো অবশ্যই কাজে আসে; নইলে আর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা কেন !

কিন্তু মাঝেমাঝে এমন কিছু জটিল পরিস্থিতির উদ্ভব হয় যে প্রচলিত কোন নিয়মই আর কাজ করে না। আপনি ম্যানেজার মালিক যাই হন না কেন, দিব্যি দেখতে পাচ্ছেন – ঘটনাতে এমন প্যাঁচ লেগেছে ! একেবারে ল্যাজেগোবরে অবস্থা — ম্যাজিক ছাড়া কোনভাবেই ঐ বিপদ থেকে উত্তরণের কোন উপায় নেই। দুর্ভাগ্যবশত: আপনি জাদুকর জুয়েল আইচ বা পিসি সরকার নন , যে ছুঃ মন্তর দিয়ে সমস্যার সমাধানের কোন উপায় বাৎলে দেবেন। এটাকে অনেকসময় আমরা বলি বটলনেক (Bottleneck ) সিচুয়েশন। হুট করে গিটঠু খোলার কোন চান্স থাকে না ।

অথচ সবাই আপনার দিকে তাকিয়ে আছে, আপনি কোন একটা পথ দেখাবেন । আমি আমার জীবনে ব্যক্তিগত ভাবে সাংঘাতিক মেধাবী ও ক্যারিসমাটিক কয়েকজন মালিক ও ম্যানেজারকে দেখেছি, যারা সমস্যারে কাছাকাছি গিয়ে দাঁড়ালেই কীভাবে যেন সবকিছু ঠিক হয়ে যেতো !

এখন আরেকটা স্বল্প-মেধাবী কিন্তু কার্যকর পদ্ধতির কথা বলি ; সেটা দিয়েও অনেক বুদ্ধিমান মালিক-ম্যানেজারকে জটিল পরিস্থিতি থেকে উত্তরিত হতে দেখেছি বহুবার। যেহেতু আমি ও আপনি উভয়েই জানি যে , আমাদের চারপাশে ক্যারিসমাটিক ম্যানেজার বা মালিকের অভাব আছে । সুতরাং ক্ষেত্র-বিশেষে দ্বিতীয় পদ্ধতিটা মন্দ নয়।

এসব ক্ষেত্রে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে সোজা একটা কথা বলে দিলেই কাজ হয়।
‘আমি জানিনা কীভাবে করবেন, কিন্তু অমুক সময়ের ভিতরে এটা করতেই হবে। কয়জন মিলে, কী কী রিসোর্স লাগবে, কীভাবে করবেন সেটা আমার দেখার বিষয় না।’
এই পদ্ধতিতে কী কাজ হয়? আলবৎ হয় ! আসলে , গভীর সমস্যায় পড়লে অধীনস্থরা অনেক সময় হাল ছেড়ে দেয়। ‘বসেরা-তো জানেই কতখানি সমস্যা, আমি নতুন করে কী করতে পারি।’ সে তার সর্বোচ্চ ক্ষমতা প্রয়োগ না করে কমফোর্ট জোনে থাকতে চায় ।

খেয়াল করে দেখবেন , পশ্চিমাদেশের বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে, বিশেষ করে তরুণ খেলোয়াড়দের মোটিভেট করার জন্য একটা কথা ঘুরে ফিরে বলা হয় “ When someone pushes his/her limits, he/she can reach their maximum potential !” ঠিক একইভাবে কাউকে বিপদসীমার উপরে এক্সট্রিম লেভেলে ঠেলে পাঠিয়ে দিলে, ভয়ংকর প্রেশার বা অন্য যে কোন কারণেই হোক না কেন সে ম্যাজিক দেখাতে পারে।

তবে লক্ষণীয় এই যে, এই ‘পদ্ধতি’ সারাবছরে একবার বা দুইবারের বেশী প্রয়োগ করা উচিৎ নয়। ঘন ঘন এক্সট্রিম প্রেশার মালিক বা ম্যানেজারকে অধীনস্থদের কাছে ক্লিশে করে ফেলে !

[ প্রকাশকালঃ ১৫ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ]