প্রযুক্তি!

যখন যে প্রযুক্তি এসেছে , তার ভালো দিক মন্দ-দিক বোঝার চেষ্টা করুন। প্রযুক্তির বৈভব , পরাভব মেনে নিতেই হবে। আজকের পৃথিবী এমনভাবে সংযুক্ত হয়ে আছে, এর বাইরে আপনি থাকতে চাইলে আপনাকে বনবাস নিতে হবে। আমার দুই কন্যাকে নানা প্রযুক্তির পাশাপাশি রেখেও বই পড়তে উৎসাহিত করেছি। বই এমন একটা মাধ্যম, যেখানে আপনার কল্পনাশক্তি কাজ করে, মাথা খাটাতে হয়। বই ইলেকট্রনিক অন্য সব মিডিয়ার মতো রেডিমেড ইনস্ট্যান্ট নুডলস নয়। বইকে আমি এখনো তুলনা করি, রান্না করে পরিতৃপ্ত হয়ে খাওয়ার মতো। জীবনের স্বাদ পেতে হলে আপনাকে নিজে বেছে বাজার করতে হয়, সেগুলো নানা প্রক্রিয়ার পরে রান্না করে তারপরে সুস্বাদু খাদ্যে পরিণত করতে হয়। তাই, অন্য সকল ইনস্ট্যান্ট মিডিয়ার সঙ্গে বইয়ের তফাৎ আজন্ম থাকবে।

টিভি ও ইন্টারনেট আমাদের আসক্ত করে রাখে । কীভাবে রাখে সেটা নিয়ে একবার বড়কন্যার সঙ্গে কথা হচ্ছিল। বেশ কয়েকবছর আগে, বড়কন্যাকে বোঝালাম, ধরো তোমার আই-কিউ ৯০। কিন্তু টিভি, ভিডিও গেম, ইন্টারনেটের যে কোন প্রোগ্রাম একক কোন ব্যক্তির করা নয়। ধরো তাঁদের ভিতরে কয়েকজনের আই কিউ তোমার চেয়ে অনেক বেশি। তাঁদের সম্মিলিত আই কিউ দিয়ে সে অনেক সময় ব্যয় করে একটা অনুষ্ঠান করেছে, সেটা তোমাকে আটকে রাখার জন্য, আসক্ত করার জন্য। ছুটিতে , অলস সময়ে ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে কিছুক্ষণ সময় দেওয়া যায়। কিন্তু সময় তো অফুরন্ত নয়। নানাবিধ কার্যকরী কাজে নিজেদেরকে নিযুক্ত করতে হয়। পড়াশোনা, কর্মজীবন, পরিবারকে সময় দিতে হয়। যা আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ না, এড়িয়ে যান। নিজের প্রায়োরিটি দিয়ে প্রযুক্তিকে পরাভূত করা শিখতে হয়।