কোন এক গুণী, কোন এক সময় বলেছিলেন, বাঙালি হচ্ছে পশ্চাদ্দেশের মতন, সর্বদাই দ্বিখণ্ডিত। যথারীতি কোভিড নিয়েও বাঙালি দুইভাগে বিভক্ত। কেউ কোভিডকে নিয়ে তুচ্ছতাচ্ছিল্যের চরমে আর কেউ অতিমাত্রায় আতঙ্কিত হতে হতে শুচিবায়ুগ্রস্ত রোগী। দুটোর কোনটাই স্বাস্থ্যকর নয়।
কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে সবার মন বিক্ষিপ্ত ।
বছর তিরিশ আগে মামার কাছে শোনা পূর্ববঙ্গের আঞ্চলিক কথোপকথন মনে পড়ল।
হয়েছে কি , গ্রামের এক আদম হাটে যাচ্ছে গরু কিনতে। পথে মুরব্বীর সঙ্গে দেখা। জিজ্ঞেস করলেন,
: ভাইস্তে কই যাতিছো?
: হাটে যাচ্ছি কাকা, গরু কিনতি।
: বাপু হে , একটা শুভ কামে যাইচ্ছ, ‘ইনশাল্লাহ্’ বলো। বলো ‘গরু কিনতি হাটে যাচ্ছি ইনশাল্লাহ্।’
ভাতিজা কিছুটা তাচ্ছিল্যের স্বরে বলল,
: হাটে গরু রয়ছে, আর আমার পকেটে টাকা ! এর মাঝখানে ‘ইনশাল্লাহ্’ আসে কুথা থেকে !

যাই হোক সন্ধ্যারাতে সেই আদম বিধ্বস্ত, শূন্য হাতে গ্রামে ঢুকছে।
মুরব্বী জিজ্ঞেস করল, ‘ব্যাপার কি ভাইস্তে , গরু কোনে ?’
আদম ভীষণ বিষণ্ণ কণ্ঠে উত্তর দেয়, ‘চাচা হাটের পথে রওয়ানা দিলাম ইনশাল্লাহ্। হাটে পৌঁছালাম ইনশাল্লাহ্। খানিকক্ষণ হাটে ঘোরাঘুরি করলাম ইনশাল্লাহ্। কয়েকটা গরুও দেখলাম ইনশাল্লাহ্। এট্টা পছন্দ করলাম ইনশাল্লাহ্। দামদর কইরে কিনেও ফেললাম ইনশাল্লাহ্। কিন্তু আসার পথে ডাকাত ধইরল ইনশাল্লাহ্। আমাক মাইরে-টাইরে গরু কাইড়ে নিল ইনশাল্লাহ্। কাছে টাকাপয়সা যে কয়ডা বাঁচিছিল কাইড়ে নিল ইনশাল্লাহ্। এখন বাড়ি ফিরে যাচ্ছি ইনশাল্লাহ্।’

প্রিয়জন অথবা নিজে আক্রান্ত হওয়ার পরে শুচিবায়ুগ্রস্ত না হয়ে এখন থেকেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন।

প্রথম প্রকাশঃ ৬ই এপ্রিল ২০২১