by Jahid | Sep 29, 2022 | লাইফ স্টাইল
ঈদের এই শেষের দিনগুলোতে এসে স্মরণ করছি আমার সেই কলিগকে, যিনি বছর কুড়ি আগে ঈদে রাজশাহীতে গিয়েছিলেন বেড়াতে। একই সঙ্গে স্মরণ করছি, সেই সময়ের নবীন প্রেমিক-প্রেমিকাদের, যারা ঈদের ছুটির সুযোগে নানারকম ‘সুযোগ’ খুঁজতেন।
তো, হঠাৎ বৃষ্টির বিকেলে আমার কলিগ অনেকের সঙ্গে দাঁড়িয়ে ছিলেন নিউ মার্কেটের বারান্দায়। ঝুম বৃষ্টিতে রিকশা নেই, অনেকেই অপেক্ষা করছে। অনেকের মাঝে একজন সুবেশী তরুণীও দাঁড়িয়ে আছে।
ইতোমধ্যে একটি রিকশা তার ডাকে সাড়া দিয়েছে।
তো কলিগের পাশের স্থানীয় লোকটি তরুণীটির দিকে ইঙ্গিত করে তাকে খোঁচা দিয়ে বলল,
: ব্যাপারটা দেইখছেন ভাই?
: কেন ? কি হয়েছে?
: রিকশা লিচ্ছে।
: তো? রিকশা নেবে না ?
: আরে ভাই , বুইসঝতে পারছেন না?
: না ভাই, বুঝলাম না। লোকজন রিকশায় উঠবে না ?
রিকশায় ততোক্ষণে তরুণীটি উঠে পড়েছে এবং পাশের তরুণটিও উঠছে। রিকশাওয়ালা পলিথিনের আচ্ছাদনে ঢেকে দিচ্ছে সামনের দিক।
স্থানীয় লোকটি আরো উত্তেজিত গলায় বলল,
: দেইখছেন , দেইখছেন পাশের ছেলিটাও উঠছে।
: হ্যাঁ , উঠছে, সমস্যা কি? হয়তো পরিচিত।
লোকটি তখন উত্তেজিত গলায় কলিগকে হাতের বিশেষ ভঙ্গী দেখিয়ে বলল:
আরেহ্ ভাই, এখনো বুইসঝতে পারছেন না? এখন ছেইনবে, ছেইনবে !
প্রথম প্রকাশঃ ৫ই মে ২০২২
by Jahid | Sep 29, 2022 | দর্শন, লাইফ স্টাইল
মারা খাওয়ার দর্শন:
এই যুগে সবাই কমবেশি চালাক ও স্বার্থপর। নিজেকে নিজে যতোই বলি না কেন , আমি সহজ সরল, কারো ক্ষতিবৃদ্ধি করি না ; কিন্তু একেবারে ধর্মপুত্তুর যুধিষ্ঠির তো আর কেউ নই। কেউ কেউ আছে যারা অতিচালাক ও অতিস্বার্থপর। তাদের নিয়েই কিছু কথা। আমরা যারা কম চালাক ও কম স্বার্থপর, তারা সামাজিক ও পারিবারিক জীবনে নানা রকম মারা খাই। মূলত: যারা বেশি চালাক ও অতিস্বার্থপর তাদের কাছ থেকেই খাই। খেয়েই ব্যথায় কাতরাই, সবাইকে দুঃখের কথা বলি, মনের দুঃখে বনে যাই অবস্থা।
কিন্তু যারা এক্সট্রিম শ্রেণির, তাদেরকে দেখে মনে হবে, কীভাবে কী দারুণভাবে তাদের জীবন ও সংসার চলে যাচ্ছে। একেবারে মসৃণভাবে। অথচ , আমরা প্রতিপদে হোঁচট খাচ্ছি, কেউ ধাক্কা দিয়ে চলে যাচ্ছে, কেউ সবার আগে কেড়ে নিচ্ছে, সবার আগে বিলাসব্যাসনে তৃপ্ত হচ্ছে, পৃথিবীর সামাজিক প্যারামিটারে যোগ্যতার অনেক বেশি অলৌকিকভাবে ছিনিয়ে নিচ্ছে, এবং এদের ধাক্কার চোটে আর অতিস্বার্থপরতায় আমরা কতিপয় আমজনতা মুষড়ে পড়ছি।
প্রশ্ন হচ্ছে তারাও কি মারা খায় না।
খায়। অবশ্যই খায়।
তবে সেটা কোনভাবেই তারা প্রকাশ্যে আনে না। কিল খেয়ে কিল হজম করে। শুধু বিজয়ী চেহারাটা দেখায়।
জীবনের মারা আপনাকে খেতেই হবে, কম আর বেশি।
আপনি হা হুতাশ করলে লোকে জানবে। চেপে গেলে কেউ জানবে না।
আমি প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর থেকে ধার্মিক ও দার্শনিক আকাঙ্ক্ষা থেকে অতিস্বার্থপরদের মারা খাওয়া খুঁজে পাওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা দেখেছি কম স্বার্থপরদের ভিতরে। এটা মূলত সান্ত্বনা পাওয়ার চরম প্রয়োজনেই। আপনি মারা খেলেন, আরেকজন আজীবন মারা দিয়ে গেল, কিন্তু কোনভাবেই খেল না, সেটা তো মেনে নেওয়া কঠিন। এতো মনকষ্টে তো হৃদরোগে ভুগে অকালমৃত্যু হবে। তাই, চালাক-স্বার্থপরদের মারা খাওয়া খুঁজে পাওয়ার আনন্দ অসীম ও বেদনার ক্ষতে প্রলেপের মতো।
সুতরাং আপনি চোখকান খোলা রাখেন বা নাই রাখেন, আপনার চোখে পড়ুক বা নাই পড়ুক- অতিচালাক ও অতিস্বার্থপররা নানাভাবে মারা খাচ্ছে। কিন্তু তাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের জন্য সেটার কিয়দংশও প্রকাশ্যে আসছে না।
প্রকাশকালঃ ১৭ই ফেব্রুয়ারি ২০২২
সাম্প্রতিক মন্তব্য