” আরও বললেন, ও-সব কিছুই শেষ পর্যন্ত আলাদা দাগ কাটে না, ও-সব অভিজ্ঞতাই মানুষকে পরিপূর্ণতার দিকে নিয়ে যায়।
আমি জীবনে অনেক কিছু দেখেছি, এই তো আমার ছেলে বসে আছে ( ওঁর পুত্র এবং ঔপন্যাসিক সনৎ বন্দোপাধ্যায় কাছেই বসেছিলেন), ওঁর সামনেই বলছি, আমি অনেক ভোগের মধ্যে গিয়ে দেখেছি, মদ খেয়েছি, নানান নেশা করেছি—কিন্তু এ-সব কোনো কিছুতেই অভিভূত হয়ে পড়িনি। দুঃখ-কষ্টই বলো আর ভোগই বলো, এর সব কিছুতেই ছড়িয়ে আছে নিজেকে প্রকাশের আনন্দ, এঁরা ‘গণদেবতা’র মতো পুরষ্কার দিয়েছে—মনে পড়ছে, ‘গণদেবতা’ আর ‘পঞ্চগ্রাম’ -এর লেখার দিনগুলোর কথা। ‘গণদেবতা’র এই পাতাগুলো যেদিন লিখি–‘গণদেবতা’ বইটি খুলে তারাশঙ্কর কয়েকটি পাতা পড়ে শোনালেন, তারপর বললেন, তারপরদিন সেই বিখ্যাত সাইক্লোন ওঠে, সেই ১৯৪২ সাল-এর সাইক্লোন—সাইক্লোনের দিকে আমার চোখ ছিল না , সন্ধেবেলা বাড়ি ফেরার পথে আমি নিজের লেখার কথাই ভাবছিলুম—নিজেকে প্রকাশ করার চেষ্টা করছি, সেই ব্যাকুলতায় চোখে জল এসে যাচ্ছিল.”

জ্ঞানপীঠ পুরষ্কার পাওয়ার পরে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ও তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথোপকথন। [[ জীবনের বর্ণচ্ছটা। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়।। ]]