আমাদের স্কুলজীবনে আশির দশকেও ঠিক বর্ষাকালের আগেই ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের ঘুমন্ত সংস্থাগুলোর মনে পড়ে যেত সারাবছরের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় কাজগুলো তাদের বাকী রয়ে গেছে ! তখন বিপুল উৎসাহে এরা ঢাকার রাস্তাগুলো খোঁড়াখুঁড়িতে মনোনিবেশ করত। আমারা দেখতাম, জুলাই, আগস্ট মাসের শেষের দিকেও কী গভীর নিষ্ঠার সঙ্গে সংস্থাগুলো ঝকঝকে রাস্তাগুলো এলোপাথাড়ি খুঁড়ে খুঁড়ে সবার জীবন কী পরিমাণ দুর্বিষহ করে রাখছে।
সেই সময়ে মহল্লার এক বড়ভাই রসিকতা করে বলছিলেন, যেভাবে এরা গভীর মনোযোগ দিয়ে রাস্তা খুঁড়ছে , মনে হয় খুব তাড়াতাড়ি ‘তেল’ আবিষ্কার করে ফেলবে ! এই ‘তেল’ হচ্ছে তৎকালীন মধ্যপ্রাচ্যের পেট্রোলিয়াম তেল অর্থে। খোঁড়াখুঁড়ি শেষে দায়িত্বশীল সংস্থাগুলো দীর্ঘ শীত-নিদ্রায় চলে যেত। পুরো বর্ষাকাল থইথই পানিতে রাস্তার খানাখন্দ ভরে থাকতে থাকতে সেগুলো নদীমাতৃক পলিমাটিতে ভরে যেত। শীতের শুরুতে সেই ভাঙাচোরা রাস্তার উপরে দিয়ে গাড়িঘোড়া চলতে চলতে ধূলোয় ধোঁয়ায় নাগরিক জীবনে ব্রংকাইটিস-হাঁপানির আয়োজন হতো !
তিন দশক পরে এসেও এই সংস্থাগুলোর সমন্বয়হীনতা একইরকম রয়ে গেছে। অথর্ব এই সংস্থাগুলো সারা ঢাকার শহর খুঁড়তে খুঁড়তে পেট্রোলিয়াম তেল বের করতে না পারলেও, আমাদের মতো সাধারণ জনগণের তেল যে বের করতে পারছে সে ব্যাপারে আমি নিঃসন্দেহ !
প্রকাশকালঃ ১৩ই জুন,২০১৭
সাম্প্রতিক মন্তব্য