গত সাত সাতটি মূল্যবান মাসে সবধরনের লকডাউন, হোম কোয়ারিন্টিন, আইসোলেশন, আইসিইউ, সিসিইউ, অক্সিজেন সিলিন্ডার, স্যাচুরেশন ইত্যাদি পার হয়ে যেখানে আছি, সেটা সেই প্রথম মাসের শিক্ষার খুব কাছাকাছি।

কেননা, কোভিড-১৯ ভাইরাসের ব্যাপারে এখন পর্যন্ত গ্রহণযোগ্য, বিশ্বাসযোগ্য ও ব্যবহারযোগ্য তথ্য হচ্ছে আপনাকে মাস্ক পরতেই হবে ও নিয়মিত সাবান স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুতেই হবে। সুষমখাদ্য গ্রহণ, নিয়মিত শরীরচর্চা ও রোগপ্রতিরোধ বাড়ানো সব রোগের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, কোভিডের জন্য নতুন নিয়ম না।

মূলত: কোভিড ভাইরাস আক্রান্ত রোগী, সে উপসর্গযুক্ত হোক বা উপসর্গহীন হোক; তার সংস্পর্শে আসলে আপনার সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা কমবেশি। তাই মাস্ক পরে চলতে হবে। নিরাপদ দূরত্ব রেখে কথা বলতে হবে।
কোভিড-১৯ বায়ুবাহিত কীনা, বিতর্ক চলছেই।
এটি পানিবাহিত কীনা, বিতর্ক চলছেই।
অন্য প্রাণীকুল , বাজারের সজীব শাকসবজিতে কতোক্ষণ থাকে, নানা মুনির নানা মত আছে।
সকল নির্জীব বস্তু, চেয়ার টেবিল, সিঁড়ি রেলিং, লিফট, যানবাহন, পোশাক, জুতা মোজায় কতক্ষণ এই ভাইরাস টিকে থাকতে পারে, নানাবিধ মত আছে।
পুরো বাংলাদেশ এখন প্রায় স্বাভাবিক। সরকারি-বেসরকারি সবাই মোটামুটি কর্মক্ষেত্রে । শুধুমাত্র শিক্ষায়তনগুলো বন্ধ, সেটাও আগামী জানুয়ারিতে খুলে দিতে পারে।

যা বুঝলামঃ নিজের অজ্ঞাতে আমরা প্রতিনিয়ত কোভিড ভাইরাসের সংস্পর্শে আসছি। একই লিফট বা রেলিং স্পর্শ করছি। একই চেয়ারে বসছি। আরেকজনের চিমটি কাঁটা লাউ নিজেও চিমটি কেটে দেখছি। তবে যতক্ষণ পর্যন্ত না আমাদের হাতের স্পর্শ করা ভাইরাস আমাদের চোখ, মুখ ও নাসারন্ধ্র দিয়ে দিয়ে দেহে প্রবেশ করছে, ততোক্ষণ পর্যন্ত আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ব্যক্তি-ভেদে প্রবল বা ক্ষীণ।

আমাদের ছোটবেলায় সিনেমার কৌতুক অভিনেতারা ঘরে ঘরে অসম্ভব জনপ্রিয় ছিলেন, বিখ্যাত ছিলেন। খান জয়নুল থেকে শুরু করে হাসমত, টেলিসামাদ, আশীষ কুমার লোহ, আনিস, সাইফুদ্দিন আহমেদ আরো অনেকে। বছর পঁয়ত্রিশ আগে , সাইফুদ্দিন আহমেদ সম্ভবত: বিটিভির আনন্দমেলায় একটা ঢাকাইয়া চুটকি বলেছিলেন। তিনি অসাধারণ ঢাকাইয়া উচ্চারণে কৌতুক পরিবেশন করতে পারতেন। খুব দুর্বল স্মৃতি থেকে লিখছি, কারো কাছে মূল কৌতুক থাকলে শেয়ার করবেন।

তো, এক পাগলা গারদে একজন বড়ো ডাক্তার অথবা প্রশাসনের কর্তাব্যক্তি গেছেন পরিদর্শন করতে। উন্মুক্ত পরিবেশে মানসিক রোগীদেরকে বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত রাখা হয়েছে। প্রত্যেকের আচরণ স্বাভাবিক নয় যথারীতি । তো একজনকে দেখা গেল ড্রেনে পড়া একটা নোংরা বিড়ালকে উদ্ধার করা নিয়ে ব্যস্ত। পরিদর্শক বেশ খুশি, একটা প্রাণীকে বাঁচিয়ে তুলছে যে, সে তো আর পাগল হতে পারে না ! তাঁকে পাগলাগারদ থেকে ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দিলেন তিনি। আগ্রহী হয়ে জিজ্ঞেস করলেন বিড়ালকে নিয়ে কী করবেন সেই রোগী। সে বলল, বিড়ালের গায়ে নোংরা লেগেছে সে একে গোসল করাবে।

পুরো হাসপাতাল ঘুরে সেই পরিদর্শক যখন ফিরতি পথে ; দেখলেন সেই রোগী মৃত বিড়ালটি সামনে নিয়ে বসে আছে।
‘বিড়াল কি গোসল করার সময়ে মারা গেছে?’

‘না ডাগদর ছাব ! বিলাই তো গোছলের ছময়ে ঠিকই আছিলো। মাগার যখন চিপা পানি বাইর কইরা দড়িতে শুকাইতে দিছি, তহন মইরা গেছে।’

মোরাল অভ দি স্টোরি:
কোভিড-১৯ ভাইরাস হাতে লাগুক, জামায় লাগুক, জুতায় লাগুক লাগতে দেন। পরিষ্কার করেন ইচ্ছেমত। কিন্তু সেটা যেন হাত থেকে মুখে অথবা নাকে এসে দেহে প্রবেশ না করে। বিড়াল পরিষ্কার করে ছেড়ে দিন,শুকাতে যাবেন না

প্রকাশকালঃ ৪ঠা অক্টোবর,২০২০