সকালে ছোট কন্যার Zoom ক্লাসে কিছুক্ষণ বসেছিলাম।

ওর শিক্ষিকার জন্য বড্ডো মায়া হল। বেচারি !
১৪টা বাচ্চাকে সশরীরে ম্যানেজ করা যতোখানি না কষ্টের; তারচেয়েও বেশি ঝক্কির হচ্ছে কম্পিউটারে দূর-শিক্ষণে এদের নিয়ন্ত্রণ করা । একজন চেঁচিয়ে স্ক্রিনের লেখা পড়ছে, আরেকজন গুনগুন করছে। আরেকজন ‘মিস্ , মিস্, মিস্, মিস্ ’ বলে দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা চালিয়েই যাচ্ছে ক্রমাগত। রীতিমত হাটবাজার আর কী !
আমার এক খালাম্মা স্কুল শিক্ষিকা ছিলেন সেই আশির দশকে।
সেই সময়ে একেক ক্লাসে ন্যুনতম ৬০ থেকে শুরু করে প্রায়ই ৮০ জন ছাত্রছাত্রী থাকত।
আমরা দূর থেকে দেখতাম, খালাম্মা ক্লাসের এই প্রান্ত থেকে ঐ প্রান্ত দৌড়ে বেড়াচ্ছেন হাতে কাঠের স্কেল। ছোট ছোট বাচ্চাদের কিচিরমিচির । খালাম্মা কোনদিন শারীরিক প্রহার করতেন না, তবে দুষ্টুমি করলে , বেঞ্চের উপর দাঁড় করিয়ে রাখতেন। বাচ্চাগুলো বেঞ্চে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই গা গা গি গি করত।

খালাম্মা একদিন আম্মাকে আফসোস করে বলছিলেন, ‘ বাপমায়ের আর কী ! এরা তো বছর বছর পুক্ পুক্ করে বানিয়ে আমাদের কাছে পাঠিয়ে দেয়। আর , এগুলোকে মানুষ করতে যতো যন্ত্রণা আমাদের !’ আমি তখন কিছুটা সাবালক, তাঁর সেই ‘ পুক্ পুক্ ’ শব্দচয়ন আমার কানে বিঁধেছিল । তাঁর বেদনা সেই সময়েই টের পেয়েছিলাম। আজ এই ত্রিশ বছর পরে যেমনটি টের পেলাম ছোটকন্যার শিক্ষিকার বেদনা।
সকল শিক্ষক-শিক্ষিকার জন্য আমার শুভকামনা।