তর্কে কেউ নাকি জেতে না। আমরা যাকে ব্যক্তিগত পর্যায়ের তর্ক বলি ; সেটাকে অনেকে বড় আঙ্গিকে ‘বিতর্ক’ বলেন। আমি প্রাতিষ্ঠানিক বিতর্কের কথা বলছি না। আমি বলছি, প্রাত্যহিক জীবনের সহকর্মীর সঙ্গে, বন্ধুর সঙ্গে, ভিন্নমতের, ভিন্ন ধর্মবিশ্বাসের কারো সঙ্গে যে তর্কগুলো আমরা করে থাকি– হতে পারে সেটা ফেসবুকে, হতে পারে মুখোমুখি অথবা অন্য কোন প্ল্যাটফর্মে—সেটার কথা।
ব্যক্তি পর্যায়ের তর্কগুলো অনেকাংশে ‘কুতর্কে’ পর্যবসিত হয়। আমি যেটা বুঝেছি, একজনের সচেতন উপলব্ধি আরেকজনকে দেওয়া খুব মুশকিল। এই ধরাধামে আবির্ভূত মহামানবের বাণী হাজার বছর পার হয়েও মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারেনি ; আর আমি-আপনি তো নস্যি সেক্ষেত্রে। মজার ব্যাপার , সাধারণ মানুষের প্রবণতা হচ্ছে, যেভাবেই হোক তর্কে জেতা। জেতার জন্যে তাঁরা মূলক, অমূলক, ভিত্তিহীন, জানা-অজানা নানা বিষয়কে রেফারেন্স হিসাবে হাজির করেন। কবেকার কোন ‘টক-শো’-তে কোন অধ্যাপক কিংবা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব কি বলেছিল সেটার কথা বলেন। কবেকার কোন প্রাগৈতিহাসিক বিলুপ্ত পুস্তকে কী কী বলা আছে সেটার কথা বলেন।
কিন্তু তর্ক সচরাচর কোন সমঝোতায় পৌঁছায় না। আমার তো মনে হয়, এই ধরণের তর্কে জিতে যাওয়ার একটা সান্ত্বনামূলক অবস্থায় পৌঁছাতে যে পরিমাণ শ্রম ও শক্তি অপচয় করবেন; সেটা না করে মৃদু হেসে নিশ্চুপ থাকা অনেকাংশে মঙ্গলজনক। যোগ্য তার্কিক না হলে আমি কখনই নিজের শক্তিক্ষয় করিনা।
ব্যক্তি তাঁর পরিবার, শিক্ষায়তন, কর্মস্থল ও পরিপার্শ্বের সাহচর্যে সুদীর্ঘ অনেক বছর ধরে কিছু রুচি, যুক্তি, অযুক্তি, সংস্কার, কালচার নিয়ে বেড়ে ওঠে; তাকে কোন নতুন মতবাদ, মতাদর্শ শুনিয়ে লাভ নেই—যদি না সে নিজে থেকে সেটা আপনার কাছ থেকে শুনতে চায়!
সাম্প্রতিক মন্তব্য