নিরাপত্তাহীনতা বা ইনসিকিউরিটি !
জীবনের সবচেয়ে অবিচ্ছেদ্য অনুভূতি হচ্ছে নিরাপত্তাহীনতা । সীমিত আকারে থাকা ভালো। বেশি নয়। আপনার আসল নিরাপত্তা-বোধ আপনার নিজের কাছে, আপনার প্রিয়জন ও পরিবারের কাছে। অসীম পরিমাণ অর্থকড়ি থাকলেও সেটা আপনার জীবনকে নিরাপত্তার স্বস্তি দেবে না।

যে নিরাপত্তাহীনতায় আমাদের মধ্যবিত্ত অগ্রজরা ভুগেছিলেন ; তা আমাদের মাঝে বংশানুক্রমে চলে আসে। বিদ্যা-শিক্ষা, উপার্জন, পরিশ্রম, প্রতিযোগিতায় নানারকম প্রাপ্তি ও অর্জন দিয়ে জীবনের অর্ধেক সময় ব্যয় করে আমরা নিজেদেরকে নিরাপদ করার চেষ্টা করি । শিক্ষা, চাকরি,ব্যবসা ,টাকা, গাড়ী, বাড়ি, শেষ-বয়সের জন্যে সেভিংস ইত্যাদি ইত্যাদি। মূলত: এর কোন নির্দিষ্ট পরিমাণ বা সীমারেখা তো নেই। মাথাগোঁজার একখানি জমি হলে কি মানুষ নিরাপদ ? সে কী ক্রমাগত আরও জমির মালিক হতে চায় না ! একটা ফ্ল্যাট হলে আরেকটা করে নিরাপত্তা পোক্ত করতে চায়। নগরীর এই প্রান্তে কিছু থাকলে, ঐ প্রান্তে । ব্যক্তি লাখ টাকার ব্যাংক ডিপোজিট যেমন নিরাপত্তাহীন থাকে ; কোটি টাকা ডিপোজিটেও তাই।

কোন কিছু দিয়েই আমরা নিজেদেরকে নিশ্ছিদ্র নিরাপদ করতে পারিনা বা নিরাপদ ভাবতে পারিনা। পরবর্তী বংশধরদেরকেও একই ভাবে নিরাপদ করার ক্রমাগত চেষ্টা করে যাই। স্বদেশ থেকে দূর পরবাসে প্রবাসী হয়ে জীবনকে আরও নিরাপদ করতে চাই। একটা ঊর্ধ্বশ্বাস দৌড় ক্রমাগত আমাদের ত্রস্ত করে, ক্লান্ত করে। আর এই অসাধারণ জীবন আমাদের হাতের ফাঁক গলে কখন যে নীচে পড়ে যায় , আমরা টেরও পাইনা ! নিরাপত্তার প্রস্তুতি নিতে নিতে জীবন শেষ হয়ে যায় !